২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • খেলা
  • নুন আনতে পান্তা ফুরায় স্পেশাল অলিম্পিকজয়ী ফাতিমার
  • নুন আনতে পান্তা ফুরায় স্পেশাল অলিম্পিকজয়ী ফাতিমার

    মুক্তি কন্ঠ

    মুক্তিকন্ঠ ডেস্ক :

    মুখে ক্লান্তি, চোখে উষ্ণতার ছাপ। সে মুখে কখনো হাসি আবার কখনো বেদনার তাপ। তবুও কোনো এক আক্ষেপের কথা নিজ অঙ্গভঙ্গি দিয়ে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

    কিন্তু জন্মগতভাবে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় মুখে বলতে পারছেন না কিছুই। বলছি স্পেশাল অলিম্পিকে গোল্ড মেডেল জয়ী ফাতিমার কথা।

    বাকপ্রতিবন্ধী হয়েও বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ফাতিমা। স্পেশাল অলিম্পিকে দেশের হয়ে প্রতিযোগিতা করেছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের সাথে। ছিনিয়ে এনেছেন গোল্ড মেডেলসহ অসংখ্য পুরস্কার। সেই ফাতিমাই কিনা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

    চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় ছোট একটি রুমে জীবন থেমে আছে তার। ফুটফুটে দুটি বাচ্চার মাঝেই হয়তো নিজেকে খুঁজে বেড়ান তিনি। এক সময়ের দ্যুতি ছড়ানো উদীয়মান ফাতিমা এখন খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন কোনোমতে। হঠাৎ কি হয়েছে তার?

    অঙ্গভঙ্গিতে নিজের অসহায়ত্বের কথা বোঝানোর চেষ্টা করেন ফাতিমা। যা ব্যাখ্যা করেন তার স্বামী আশিক। তিনি বলেন, একদিকে বাচ্চাদের সময় দিতে গেলে অন্যদিকে চাকরি থাকে না। কোথাও বাসা ভাড়া নিলে এক বা দেড় মাস পরে না করে দেয়। কারণ তার ভাষা বুঝে না। সেইসাথে বাচ্চাদের একটু জোরে ডাক দিলে বা চিল্লাচিল্লি করলে অনেকের সমস্যা হয়। সবমিলিয়ে খুবই কষ্টে চলতে হয়।

    নুন আনতে পান্তা ফুরায় স্পেশাল অলিম্পিকজয়ী ফাতিমার

    এদিকে, ফাতিমা যে আসলেই অ্যাথলেটিক ছিলেন, তার প্রমাণস্বরূপ বিভিন্ন ডকুমেন্টস দেখান কালবেলাকে। এর মধ্যে রয়েছে- প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট, সার্টিফিকেট, পুরস্কারসহ নানা ডকুমেন্টস। পাশাপাশি আমরাও তাকে নিয়ে একটু ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে বিস্তর জানার চেষ্টা করি।

    স্পেশাল অলিম্পিক বাংলাদেশের জাতীয় পরিচালক ফারুকুল ইসলাম বলেন, বিবি ফাতিমা একজন অ্যাথলেট ছিল। সে একজন গোল্ড মেডেলিস্ট, ভালো অ্যাথলেট। ২০০৯-২০১৫ পর্যন্ত সে অনেক ওয়ার্ল্ড গেমসেও গেছে, রিজিওনাল গেমসেও গেছে।

    তিনি আরও বলেন, তার যদি আর্থিক সহযোগিতা লাগে তাহলে একটি অ্যাপ্লিকেশন দিক। কিছু সহায়তা করার সক্ষমতা আমাদেরও আছে। তবে তা রেগুলার দিতে পারব না। সে যাতে কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা পায় সেজন্য তার নাম গত বছর জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য দিয়েছি। যদি সে পুরস্কারটি পায় তাহলে-তো এক লক্ষ টাকা পেয়ে যাবে। আর আমি শুনেছি যে, এ বছরের পুরস্কারে তার নামটি আছে।

    প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও নিজের দক্ষতায় বিশ্ব মঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন ফাতিমা। তবে, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, স্বামী-সন্তান নিয়ে আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের সহায়তার হাত বাড়ানোর আকুতি স্পেশাল অলিম্পিকজয়ী এ অ্যাথলেটের।

    সূত্র : কালবেলা