২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • আইন আদালত >> শিল্প ও সাহিত্য
  • নিষিদ্ধ হলো ‘প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই’
  • নিষিদ্ধ হলো ‘প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই’

    মুক্তি কন্ঠ

    এবারের একুশে বইমেলায় নিষিদ্ধের তালিকায় যোগ হল আরেকটি বই। ‘প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই’ শিরোনামের বইটি লিখেছেন ববি হাজ্জাজ। এর প্রকাশক গতিধারা।

     

    বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের ছেলে ববি এক সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের উপদেষ্টা ছিলেন। পরে নিজেই একটি রাজনৈতিক দল গড়েন।

     

    একুশে বইমেলার টাস্কফোর্স কমিটি ববির বইটি প্রদর্শন ও বিক্রি না করতে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে গতিধারাকে। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটি সেই নির্দেশনা মেনে মেলায় বইটি বিক্রি ও প্রদর্শন বন্ধ রেখেছে।

     

    বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি অসীম কুমার দে বৃহস্পতিবার বলেন, “নীতিমালা না মানায় বইমেলায় এই বইটি বিক্রি ও প্রদর্শন করতে মানা করা হয়েছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে। তারা আমাদের সাথে একমত হয়েছেন এবং বইটি মেলায় বিক্রি ও প্রদর্শন করছেন না।”

     

    সোমবার বইটি নজরে আসার পরদিনই এই নির্দেশনা দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা যেহেতু আমাদের নির্দেশনা মেনে নিয়েছে। এজন্য আর লিখিত নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।”

    <div class="paragraphs"><p>ববি হাজ্জাজ</p></div>

     

    মেলায় গতিধারার স্টলে গিয়ে দেখা যায়, বইটি বিক্রি করা হচ্ছে না। স্টলের বিক্রয়কর্মীরা জানান, মঙ্গলবার থেকেই মেলায় আর তারা বইটি বিক্রি বা প্রদর্শন করছেন না। তবে বিভিন্ন অনলাইন বুক শপে এবং বাংলাবাজারে তাদের নিজস্ব কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।

     

    গতিধারার নির্বাহী পরিচালক আহমেদ কাওসার বলেন, “মেলা কমিটি থেকে মৌখিকভাবে আমাদেরকে বলেছে বইটি বিক্রি বা প্রদর্শন না করতে। আমরা আর বিক্রি করছি না।”

    বইটি নিয়ে বাংলা একাডেমি কী আপত্তি তুলেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বইয়ের নাম দেখেই মূলত আপত্তি করেছে, বইটার ভেতরে আসলে আপত্তিকর কিছু নাই।”

     

    বইয়ের লেখক ববি হাজ্জাজ বলেন, “এটি মূলত একটি উপন্যাস। আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি, এখানে কোনো ব্যক্তি বিশেষকে কটাক্ষ বা কুরুচিপূর্ণ কিছু লেখা হয়নি।

     

    “আমি যতটুকু জেনেছি, তারা বইটির নাম নিয়ে আপত্তি করেছে। পুরো বইটি তারা পড়েননি। পড়লে আমার মনে হয় বইটি সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক ধারণা হবে না। এই বইটি সবাই পছন্দ করবেন।”

     

    বইটি নিষিদ্ধ করার আগে লেখকের সঙ্গে বাংলা একাডেমি যোগাযোগ করেনি বলে ববি জানান।

    <div class="paragraphs"><p>ববি হাজ্জাজের এই বইটি বইমেলায় বিক্রি করতেমানা করা হয়েছে</p></div>

    উপন্যাসটির ফ্ল্যাপে বইটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, “কল্পনার এক আজব দেশ, যেখানে সব নিয়মকানুন তৈরি করে পোকামাকড়রা। তাদের ইশারাতেই পরিচালিত হয় দেশ। সেই দেশে আবার রাজনীতিও চলে, তবে সেটা প্রহসনের রাজনীতি। আর সেই রাজনীতির এক উত্তাল সময়ে আকস্মিকভাবে প্রেসিডেন্টকে তুলে নিয়ে যায় কীটপতঙ্গের হর্তাকর্তারা। কোথায় নিয়ে যায়, কেন নিয়ে যায় এর কোন জবাব দিতে তারা নারাজ। সেই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী খালিদ। উত্তাল সেইসময়ের ঘটনাচক্রে পড়ে খালিদ তার নিজের আত্মপরিচয় খুঁজতে শুরু করে।”

     

    মেলায় বই নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ববি হাজ্জাজ বলেন, “একজন লেখক হিসেবে এবং এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, অবাধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের সবার থাকা উচিৎ।

     

    “সাহিত্যের একটা কাজ এভাবে জনগণের কাছ থেকে অবরুদ্ধ করে করে রাখাটা সবভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করা হয় এবং দেশের তরুণ সমাজ বা আগামী সমাজের বিকাশকে রুদ্ধ করার মতোই একটা কাজ এটা। এটাকে আমরা অত্যন্ত নীতিবাচক মনে করি।”

     

    এবারের বইমেলায় এর আগে নিষিদ্ধ হয়েছে জান্নাতুন নাঈম প্রীতির ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’। এছাড়া আদর্শ প্রকাশনীর ভিন্ন বই নিয়ে আপত্তি থেকে তাদের স্টলই বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

    তথ্য সুত্র: বিডিনিউজ