২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • অপরাধ >> সারাদেশ
  • চোখের সামনে পুড়ে গেল বোন-ভাগনে, রোমহর্ষক বর্ণনা হাবিবের
  • চোখের সামনে পুড়ে গেল বোন-ভাগনে, রোমহর্ষক বর্ণনা হাবিবের

    মুক্তি কন্ঠ

    মুক্তিকন্ঠ ডেস্ক :

    রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ১৯ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ট্রেনটি। আতঙ্কিত যাত্রীরা ভেতরে চিৎকার করলেও ট্রেনের চালক বুঝতে পারেননি আগুন লাগার বিষয়টি।

    ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার জানান, আগুনের খবর ভোর পাঁচটা ৪ মিনিটে পাওয়া গেছে। তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট পাঁচটা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ প্রহরায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সকাল ছয়টা ৪৫ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।

    এ সময় একটি বগি থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলোর মধ্যে একটি শিশু, একজন নারী ও দুজন পুরুষ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ৩ বছরের ছেলে ইয়াছিন। বাকি দুজনের পরিচয় জানা যায়নি।

    নেত্রকোনার হাবিবুর রহমান হাবিব। হাবিবুরের চোখের সামনে ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়ে পুড়ে মারা যায় বোন নাদিরা আক্তার পপি ও ৩ বছরের ভাগনে।

    হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে আমাদের বাড়ি। তেজগাঁও তেজতুরী বাজার এলাকায় থাকি আমরা। আমার বোন নাদিরার স্বামী মিজানুর কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করেন। বেড়ানোর জন্য গত ৩ ডিসেম্বর তারা গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন এবং গত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে চড়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। সঙ্গে ছিলেন তার বোন নাদিরা ও তার দুই ছেলে ইয়াসিন (৩) ও ফাহিম (৮)।

    হাবিবুর আরও জানান, তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছানোর পর ট্রেনের পেছনের সিটে আগুন দেখতে পান তিনি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে তিনি দৌড়ে ফাহিমকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে গেলেও নামতে পারেনি ভাগনে ইয়াসিন ও বোন নাদিরা। তাদের আর কোনোভাবেই বের করতে পারেননি তিনি। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাদের মরদেহ বের করে।

    গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহল্লাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়ার চিলাই ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্বৃত্তরা রেললাইন কেটে ফেলায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় এক যাত্রী নিহত এবং কয়েক যাত্রী আহত হন।

    তথ্য সূত্র : কালবেলা