২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • গণহত্যা দিবসে শহীদদের প্রতি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের শ্রদ্ধা
  • গণহত্যা দিবসে শহীদদের প্রতি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের শ্রদ্ধা

    মুক্তি কন্ঠ

    মুক্তিকন্ঠ ডেস্ক :

    জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ২৫ মার্চ সোমবার রাত ১১টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের উদ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ। উক্ত কর্মসূচীতে একাত্মতা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও মোমবাতি প্রজ্বলন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের নেতৃত্বে উক্ত কর্মসূচীতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

    মোমবাতি প্রজ্বলন ও শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমরা তাঁদের অসামান্য অবদান নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে কাজ করবো। ভয়াল ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে বেশী বেশী করে তুলে ধরতে হবে। কারণ ১৯৭১ সালের এইদিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অন্যায়ভাবে নিরীহ বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নৃশংস গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালিয়েছিল। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পরিকল্পিত ভাবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পিলখানায় নৃশংসভাবে গণহত্যা চালায়। প্রায় শতাধিক পুলিশ সদস্য সেদিন রাতে নির্মমভাবে জীবন হারিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। দেশের জন্য জীবন হারানো পুলিশ সদস্যসহ সকল শহীদদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত ৩০ লক্ষ বাঙালিকে গণহত্যা ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হানি করার অপরাধে জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোন বিচার হয়নি যা কখনোই বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। জাতিসংঘের নিকট দাবি, অবিলম্বে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। বাঙালির ইতিহাসের কালরাত ভয়াল ২৫ মার্চ। নিরীহ বাঙালির ওপর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো বর্বর গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিজড়িত ইতিহাসের এক অধ্যায়।”

    সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “একাত্তরে গণহত্যা ও গণধর্ষণের অপরাধে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয় ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা এদেশের মানুষ কখনোই ভুলবে না। স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য অপারেশন সার্চলাইট নামক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। অভিযান শুরু করার পূর্বে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।বাঙালিদের ওপর আক্রমণের পর গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। জাতিসংঘের নিকট দাবি, একাত্তরের নৃশংস গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তানকে জবাবদিহি করে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ২৫ মার্চের বর্বরতাকে স্মরণ তথা প্রকৃতার্থে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি জাতির চিরন্তন শ্রদ্ধার স্মারক এবং সাক্ষ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। অবিলম্বে ২৫ মার্চকে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এজন্য বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে সরকারকে কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট দাবি, আগামী ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দিতে হবে। আমরা আগামী বছর থেকে ২৫ মার্চকে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করতে চাই।”