২৪শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • আর্ন্তজাতিক
  • গাজায় মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনার জবাবে যা জানাল ফিলিস্তিনিরা
  • গাজায় মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনার জবাবে যা জানাল ফিলিস্তিনিরা

    মুক্তি কন্ঠ

    মুক্তিকন্ঠ ডেস্ক :

    গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার এ প্রস্তাবনাটি উত্থাপন করা হয়। মার্কিনিদের উত্থাপন করা প্রস্তাবনাটির জবাব দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। এতে কিছু শর্তারোপ করেছে গোষ্ঠীটি।

    মঙ্গলবার (১১ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছে প্রস্তাবনার মূল্যায়ন জমা দিয়েছে হামাস। এতে করে বেশ কয়েকটি শর্তারোপ করেছে তারা। এতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির তারিখ আগেই নির্ধারণ করতে হবে। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পর আলোচনার মাধ্যমে তারিখ নির্ধারণে সম্মত নয় গোষ্ঠীটি।

    হামাসের দাবি, গাজা থেকে ইসরায়েলের সব সেনাকে প্রত্যাহার করতে হবে। এমনকি মিসরের রাফাহ সীমান্তবর্তী এলাকায়ও কোনো ইসরায়েলি সেনা থাকতে পারবে না।

    গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষ হলে গাজা পুনর্গঠনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটি এখন ধ্বংসপুরীতে পরিণত হয়েছে। ধুলোর সঙ্গে মিশে গেছে গাজার সব ভবন। ফলে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে গাজা।

    ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিষয়েও শর্তারোপ করেছে হামাস। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি কারাগারে থাকা সব হাইপ্রোফাইল বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। এক্ষেত্রে ইসরায়েল কোনো আপত্তি করতে পারবে না। অর্থাৎ হামাসের চাহিদামতো যে কোনো বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।

    ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যে প্রস্তাবনা করেছিল তার প্রধান বিষয়গুলো হামাস পরিবর্তন করে ফেলেছে।

    এর আগে গাজায় তিন স্তরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা পেশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিন স্তরের এই প্রস্তাবের শুরুতে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধ বিরতির কথা বলেছে ইসরায়েল। এটি হবে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়। এ সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

    যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক’ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং আহত জিম্মিরা থাকবেন। এর বিনিময়ে ইসরায়েলে বন্দি থাকা কয়েকশ মানুষকে মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া হামাসের হাতে জিম্মি অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে হবে।

    গাজার সব এলাকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফিরতে সুযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো হবে। গাজায় প্রতিদিন মানবিক সহায়তাবাহী ৬০০ ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজাবাসীর জন্য হাজারো সাময়িক আবাসনের ব্যবস্থা করবে।

    ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা চলমান থাকবে। যদি আলোচনা সফল হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।

    দ্বিতীয় স্তরে বাদবাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। তাদের মধ্যে জিম্মি পুরুষ সেনারাও থাকবেন। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’ উন্নীত করা হবে।

    তৃতীয় স্তরে জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরনের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে।

    সূত্র : কালবেলা